জুল রেনার : “কয়েক টুকরো ছেঁড়া মেঘ” থেকে নির্বাচিত অংশ
উদ্ধত, গম্ভীর মুখ দেখে ঠকবেন না— এই মুখগুলিই ভীরু। চিন্তার খুচরো ভাঙানি হল শব্দ। এক-একজন কথক আমাদের দেন সিকি … Read more
Boipattor Now : All Open to Order : Free Shipping : Delivery thru Speed Post
|
No products in the cart.
অঁরি মাতিস
এক চিত্রকরের জীবনভাবনা
লেখা কথা রেখা
আধুনিক পশ্চিমি চিত্রজগতে আচার্যস্থানীয় অঁরি মাতিস এক চিত্রকরের জীবন ও ভাবনার স্বচ্ছ ও সৎ, নির্ভরযোগ্য ও ধারাবাহিক এক বিবরণ রেখে গেছেন তাঁর লেখায় ও কথায়। সেখানে পশ্চিমি শিল্পী ও শিল্পধারার নির্ভেজাল বিশ্লেষণ আছে, সে-সব গ্রহণ-বর্জনের যুক্তি আছে, আছে নিজেরও যাত্রাপথের খুঁটিনাটি। নিজের সৃষ্টির প্রক্রিয়া কী, কী ভাবে তিনি দেখেন, কী ভাবেন, নিজেকে প্রস্তুত করেন কী ভাবে, অবশেষে কাজ করার সময়ে তাঁর বিশেষ লক্ষ্য থাকে কোন্ দিকে— সে-সবই তিনি অবিরল ধারে বলে গেছেন। প্রতিটি ছবির কথা তিনি মনে করতে পারেন, কী তার উৎস, কোন্ ধারার সঙ্গে যোগ, রূপের বৈশিষ্ট্য, কী ছিল সেখানে তাঁর অন্বিষ্ট— কোন কাজেরই কোন অনুপুঙ্খ তিনি ভোলেন না। মেজাজে তিনি শান্ত, স্থিতধী, নিজের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বিষয়ে সম্পূর্ণ সচেতন ও মনস্ক। একই সঙ্গে ছবি আঁকার জন্য তিনি ছবি-আঁকা বাদে আর সমস্ত কিছুকে সরিয়ে রেখে জীবনকে সরল করে আনার কথা বলেন, প্রায় সন্তের মতো প্রয়োজনকে নামিয়ে আনতে বলেন ন্যূনতমে, আসলে বোধ হয় নিরঙ্কুশ এক জীবনসাধনার দিকেই তিনি ইঙ্গিত করেন।
এই জীবনসাধনা নিয়ে এক মহৎ চিত্রকরের ভাবনার কথা তাঁরই লেখা আর কথায় এই বইয়ে থাকল, আর থাকল তাঁর কিছু রেখা।
সংকলন ভাষান্তর সম্পাদনা : সন্দীপন ভট্টাচার্য
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আছে আমার ছবি : নির্বাচিত পত্রাংশে চিত্রকরের আত্মকথা
“এই টলমলে অবস্থায় এখনো দুটো পাকা ঠিকানা পেয়েছি আমার বানপ্রস্থের— গান আর ছবি। এদের উপরে বাজারের বস্তাবন্দীর ছাপ পড়েনি।… কলার সকল বিভাগে আমি ব্রাত্য…। আছে… আমার ছবি। কোথা থেকে দেখা দিতে এসেছে এই শেষ বেলায়, যখন রোদ্দুর পড়ে এল। আমার এই রেখানাট্যের নটী আর কারো চোখে ধরা দেয় কিনা তার সঠিক খবর পাইনে।… প্রশংসা আমার মনকে আঁকড়ে ধরেনি… আমার ছবির প্রশংসা টেকসই কিনা সে তর্ক বাজারে ওঠেনি, আমার মনেও না। আমার চৈতন্য-অন্তঃপুরে রেখারূপের জাদু নর্তকীরা একদিন পর্দানশীন ছিল, আজ পর্দা সরিয়ে বেরিয়ে এসেছে। আমার কাছে এই অদ্ভুত প্রকাশলীলার আনন্দই যথেষ্ট।… আমার ছবির খ্যাতির সম্বন্ধেও সেই কথা।… তার… অখ্যাতির গৌরবে সে আছে ভালো…।”
প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে ছবি নিয়ে তাঁর এমনই সব অনুভব, ভাবনা, উপলব্ধি, উদ্বেগ, হতাশা আর উৎফুল্লতার কথা তিনি লিখেছেন অন্তরঙ্গজনকে লেখা তাঁর অজস্র চিঠিতে। তার থেকে নির্বাচন করে এই সংকলন– চিত্রকর রবীন্দ্রনাথের আত্মকথা।
সংকলন ও বিন্যাস : সন্দীপন ভট্টাচার্য।
বব মার্লে
রক রেগ্যে রাস্তা আর শিকড়ের গান
বব মার্লে গান গাইতেন। বুক নিংড়ে গাইতেন। জামাইকায় থাকতেন তিনি, ফিরতে চাইতেন নিজভূমি আফ্রিকায়– তাঁর গোষ্ঠীর অন্যান্যদের মতো। এঁরা রাস্তাফারিয়ান। রাস্তা-র দর্শন গুরুবাদী, ইথিওপিয়ার রাজা প্রথম হাইলি সুলাসি-কে এঁরা মনে করেন পুনরুত্থিত খ্রিস্ট, আর সেই নিয়ে খ্রিস্টানদের সঙ্গে এঁদের ঝগড়া। বস্তুত এ এক প্রান্তিক দর্শন, জীবনের বহু কিছু এখানে আশ্চর্য সরলতায় জড়িয়ে আছে। গান আর দর্শন এখানে একাকার, এর কোন কিছুকেই পরস্পরের থেকে ঠিক আলাদা করা যায় না।
এই বইয়ে রয়েছে বিভিন্ন সময়ে নেওয়া রাস্তা গোষ্ঠীর সাঙ্গীতিক কণ্ঠস্বর বব মার্লে-র সাতটি সাক্ষাৎকারের সম্পাদিত বয়ান, আর তাঁর সুখ্যাত কয়েকটি গানের কথা– যেখানে পাওয়া যাবে তাঁর মর্মজীবনের কথা। আর তাঁর কর্মজীবনের কথা আছে সংশিষ্ট পঞ্জিতে।
মার্লে-র গান যাঁরা শুনেছেন, আশা করা যায় এই বইতে তাঁরা তাঁর কণ্ঠস্বর শুনতে পাবেন।
শুভেন্দু দাশগুপ্ত
রাজনৈতিক আলোকচিত্র
গোবিন্দ বিদ্যার্থী সুনীল জানা
এই বইটা দু-জন আলোক-চিত্রকর গোবিন্দ বিদ্যার্থী ও সুনীল জানার আলোকচিত্র নিয়ে।
আলোকচিত্র নিজেই কথা বলে। যা দেখায়, তার থেকে একটু বেশি বলে। আলোকচিত্রের দর্শক, পাঠক আলোকচিত্রের মধ্যে দিয়ে আলোকচিত্রের বিষয়ে, বিষয়ের ব্যাখ্যায়, রাজনীতিতে, সমাজনীতিতে, ইতিহাসে অংশগ্রহণ করে।
আলোকচিত্র এক অর্থে ইতিহাস। আলোকচিত্রে সমকালের ইতিহাস। আলোকচিত্রীর দেখা ও দেখানো ইতিহাস। ইতিহাস আলোকচিত্রের মধ্যে দিয়ে হয়ে ওঠে স্মৃতি, সময়কাল, সাক্ষ্য।
মেনে নিতেই হবে আলোকচিত্রের পক্ষ আছে। পক্ষপাত আছে। এই বইটার ছবিও পক্ষপাতিত্বের ছবি। একটা শ্রেণির প্রতি পক্ষপাতিত্বের ছবি। আলোকচিত্র নিছক নথি নয়, একটা অস্তিত্ব, একটা মূল্যায়ন এবং তা শ্রেণিপক্ষপাত-নির্ভর।
ইতিহাস পড়া ও ইতিহাস দেখার মধ্যে পার্থক্য— দেখানো-ইতিহাসকে ‘বেশি’ বাস্তব মনে হয়। ইতিহাসকে পালটে দেওয়া, মুছে দেবার কালে আলোকচিত্রের ভূমিকা আরও বেড়ে যায়। রাজনীতিক ইতিহাসের এক জরুরি তথ্যসূত্র রাজনীতিক আলোকচিত্র।
এই সংগ্রহটি একটি পরিবারের মাধ্যমে পাওয়া। গোবিন্দ বিদ্যার্থী ও সুনীল জানা কমিউনিস্ট পার্টির প্রথম দিকের সদস্য। পার্টিতে তাঁদের নিয়ে আসেন পার্টির প্রথম সাধারণ সম্পাদক পি সি যোশি। সুনীল জানা পার্টিতে আসার আগেই আলোকচিত্রী। সুনীলের অনুপ্রেরণায় গোবিন্দর আলোকচিত্রে আগ্রহ। এঁরা দু-জনেই ছিলেন পার্টি কমিউনের বাসিন্দা। এঁদের দু-জনের সেই সময়কার কিছু আলোকচিত্র নিয়ে এই বই।
অসীম রেজ
ভাসিলি কান্দিনস্কি : বিমূর্ত চিত্রের মহাবিশ্ব
রুশ শিল্পী ও শিল্পতাত্ত্বিক ভাসিলি কান্দিনস্কি-কে আধুনিক শিল্পে শুদ্ধ বিমূর্ততার অন্যতম স্রষ্টা ও প্রবক্তা বলে মনে করা হয়। অবশ্যই যেখানে পৌঁছতে তাঁকে পাড়ি দিতে হয় দীর্ঘ পথ, পেরিয়ে আসতে হয় বেশ কয়েকটি পর্যায়। তাঁর নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ‘দ্য ব্লু রাইডার’-এর মতো শিল্পগোষ্ঠী, রাশিয়ায় বিপ্লব-পরবর্তী শিল্প-সংগঠন, এবং ‘বাউহাউস’-এর মতো শিল্পশিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ড— বিশ শতকের শিল্প-ইতিহাস যার একটাকেও বাদ দিয়ে সম্পূর্ণ হয় না।
কান্দিনস্কি একদিকে যেমন সময়ের সঙ্গে-সঙ্গে তাঁর পরিবর্তিত ভাবনার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ছবি এঁকেছেন, তেমনই নিজের ভাবনাকে স্পষ্ট ও বিশদ করেছেন তাঁর লেখাপত্রে। তাঁর লেখা অন্তত দুটি বই (‘কনসার্নিং দ্য স্পিরিচুয়াল ইন আর্ট’ এবং ‘পয়েন্ট অ্যান্ড লাইন টু প্লেইন’) বিবেচিত হয় অবশ্যপাঠ্য হিসেবে। পাশাপাশি কবিতাও লিখেছেন তিনি, লিখেছেন স্মৃতিকথা।
ভাসিলি কান্দিনস্কি-র জীবন ও কাজকর্মের ভিত্তিতে লেখা এই প্রথম বাংলা বইয়ে এ-সমস্ত প্রসঙ্গই রয়েছে বিস্তারিত ভাবে। সঙ্গে রয়েছে শাদা-কালো অসংখ্য ছবির প্রতিলিপি, শুধু সেটুকু দেখলেও বিশ শতকের এই প্রধান শিল্পীর বিকাশের পথরেখাটি খানিক পরিষ্কার হবে বলে আশা করা যায়।
পাউল ক্লে
পদচিহ্ন মুছে যায়
সুইস-জার্মান শিল্পী ও শিল্পতাত্ত্বিক পাউল ক্লে (১৮৭৯-১৯৪০)-এর ছবি (পেন্টিং ও ড্রয়িং মিলিয়ে যার সংখ্যা প্রায় পনেরো হাজার), তাত্ত্বিক লেখাপত্র (‘পেডাগজিকাল স্কেচবুক’, ‘অন মডার্ন আর্ট’ বা ‘দ্য থিঙ্কিং আই’ ও ‘দ্য নেচার অফ নেচার’ নামে দুটি বিশালাকার নোটবুক-এর কথা এ প্রসঙ্গে মনে পড়বে) বিশ শতকের শিল্পকলার ইতিহাসে মোড়-ফেরানো।
পাউল ক্লে-র ছবি যদিও ঘরানাহীন স্বতন্ত্র মেজাজের, তবু বিশ শতকের বিভিন্ন শিল্প-আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর গভীর যোগ ছিল। ‘দ্য ব্লু রাইডার’, ‘দ্য ব্লু ফোর’ ইত্যাদি শিল্পীগোষ্ঠীর সক্রিয় সদস্য ছিলেন তিনি। পরে শিক্ষকতা করেছেন বাউহাউস স্কুল ও ডুসেলডরফ অ্যাকাডেমিতে, সেক্ষেত্রেও তাঁর অবদান বিস্ময়কর। স্বভাবতই নাৎসিরা তাঁর কাজকে অধঃপতিত বা অবক্ষয়িত শিল্পের তালিকাভুক্ত করেছিল।
অন্যদিকে ১৮৯৭ থেকে ১৯১৮ পর্যন্ত প্রায় নিয়মিত ডায়েরি লিখেছেন তিনি, যেখানে তাঁর ব্যক্তিগত শিল্প ও দর্শনভাবনার পরিচয় মেলে। এ বইয়ে তাঁর যোগ্য পুত্র ফেলিক্স ক্লে সম্পাদিত সেই দিনলিপির নির্বাচিত অংশের পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে লেখা তাঁর কবিতার ভাষান্তর সংকলিত হয়েছে। ক্লে-র আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ লেখাও এখানে আছে, আছে তাঁর কিছু নির্বাচিত ছবির শাদা-কালো প্রতিলিপি।
পাউল ক্লে-র ব্যাপক প্রভাব নানা ভাবে এদেশের শিল্পজগতে আমরা দেখতে পাই, কিন্তু তাঁর কাজ নিয়ে প্রকাশ্য চর্চা তেমন দেখি না। হয়তো এ বই সেই অভাব কিছুটা মেটাবে।
ভূমিকা ও ভাষান্তর : স্বর্ণেন্দু সেনগুপ্ত
গেয়র্গ ক্রিস্টফ লিশটেনব্যর্গ
বাতিল পুথি
আঠারো শতকি জর্মন বৈজ্ঞানিক গেয়র্গ ক্রিস্টফ লিশটেনব্যর্গ [১৭৪২-১৭৯৯] আক্ষরিক অর্থেই বহুবিদ্যাবিশারদ হলেও— তিনি ছিলেন গবেষণানির্ভর ভৌতবিজ্ঞানী, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, গণিতজ্ঞ, শিল্পসাহিত্য-সমালোচক— আজ প্রাসঙ্গিক কিছু প্রবচনাত্মক উক্তির জন্য। এগুলি তিনি লেখেন কয়েকটি নোটবই জুড়ে, এবং নোটবইগুলির নাম দেন ‘বাতিল পুথি’।
প্রদীপ্ত বুদ্ধিমত্তা এবং সর্বব্যাপী ঔৎসুক্য সহকারে লিশটেনব্যর্গ-রচিত এই তীক্ষ্ণ উক্তিগুলি একদিকে যেমন প্রকট করে সমাজ ও শিক্ষার ভানসর্বস্বতা, তেমনই আর-এক দিকে বিচার করে সুবিস্তৃত দার্শনিক প্রশ্নমালা; এবং ফলে এর মধ্যে আমরা সন্ধান পাই তাঁর নিগূঢ় চিন্তার এমন সব অলিগলি যা কখনও অস্বস্তিকর এবং কখনও সরসোজ্জ্বল। এগুলির বিশেষত্ব এই যে, তা আমাদের শেখায় জ্ঞানের শ্রেষ্ঠ রূপ সংশয়বদ্ধতা।
লিশটেনব্যর্গ সেই সব বিরল ভাবুকদের একজন, যিনি বিশ্বাস করেন সংশয়তিমিরে যাত্রা না করলে সত্যজ্ঞানের আলোকরশ্মির সন্ধান পাওয়া যায় না।
তরজমা উত্তরকথন টীকা : শান্তনু গঙ্গোপাধ্যায়
মীরা মুখোপাধ্যায়
প্রবাহিত জীবনের ভাস্কর্য
শিল্পকথা সাক্ষাৎকার ডায়েরি
উনিশশো সাতচল্লিশ-পরবর্তী এদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাস্কর মীরা মুখোপাধ্যায়ের একটি কথিকা দিয়ে শুরু হচ্ছে এই বই, যদিও তা নেওয়া হয়েছিল সাক্ষাৎকার হিসেবে। এর পরে রয়েছে ১৯৭০ এবং ১৯৭৪— এই দুটি বছর সমগ্রত, আর ১৯৭৬ সালের একটি মাসের দিনলিপির নির্বাচিত অংশ। আরও আছে তাঁর লেখা পাঁচটি গদ্য। রয়েছে তাঁর অতুলনীয় ভাস্কর্যের অল্প কিছু ছবি। মানুষ এবং শিল্পী হিসেবে মীরা মুখোপাধ্যায়কে জানার জন্য এই বই জরুরি।
মীরা মুখোপাধ্যায়ের জন্মশতবর্ষপূর্তির দিনটিকে মনে রেখে বিশেষ বইপত্তর সংস্করণ
বাংলা কার্টুনে ভোট
গ্রন্থনা : শুভেন্দু দাশগুপ্ত
ভোট গম্ভীর ব্যাপার। ভোট মজার ব্যাপার। ঠাট্টা-তামাশার ব্যাপার। বিষয় নিয়ে ব্যঙ্গ। কথায়, প্রতি দিনের প্রতি জনের কথায়। আঁকায়, ব্যঙ্গচিত্রীদের আঁকায়।
সেই কবে থেকে ভোট নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র। যবে থেকে ব্যঙ্গচিত্র ছাপা হওয়া বাংলা পত্রিকায়। ১৮৭৪ সাল থেকে। প্রথম ‘বসন্তক’ পত্রিকায়।
ভোট নিয়ে, ভোটের বিষয় নিয়ে সাধারণজনের হাসি ঠাট্টা মশকরা তামাশা বিদ্রূপ ব্যঙ্গচিত্রীর আঁকায়, কথায় চলে আসে। হালকা চালে। সমালোচনায়। যেমন হয় কার্টুনে। বাইরে থেকে দেখে নিলে, পড়ে ফেললে একরকম। ভিতরে ঢুকলে, বুঝে নিলে অন্যরকম। ব্যঙ্গচিত্রী সমালোচক।
প্রথম পর্বের সাজিয়ে নেওয়া কার্টুন ছাপানোর সময় ধরে।
দ্বিতীয় পর্বে দেওয়া গেল বাংলাদেশের শিল্পী রফিকুন নবী-র ভোট নিয়ে আঁকা কিছু কার্টুন।
রফিকুন নবী-র একটি জনপ্রিয় কার্টুন-চরিত্র ‘টোকাই’। টোকাইকে নিয়ে আমরা আগেই একটি বই বানিয়েছি। তাঁর আঁকা আর-একটি কার্টুন-চরিত্র ‘ভোটারালী’। টোকাইয়ের মতো ভোটারালীও না-মানুষদের সঙ্গে কথা-বলাবলি করে। সে কখনও গাঁয়ে, কখনও শহরে। কখনও সে প্রশ্ন করে, কখনও উত্তর দেয়। সে-সব প্রশ্ন আমাদেরই, উত্তরও আমাদেরই। সাধারণ মানুষদের।
এ বাংলায় ভোটারালী-কে আনা গেল এবার।
কাকুজো ওকাকুরা
চা-চরিত
প্রখ্যাত জাপানি শিল্পগুরুর বিশ্ববন্দিত ‘The Book of Tea’-এর ধ্রুপদী ভাষান্তর। জাপানি চা-সংস্কৃতির সূত্রে এ বইয়ে বস্তুত আলোচিত হয়েছে প্রাচ্য শিল্পতত্ত্ব আর নন্দনতত্ত্বের সার কথা। বইটি প্রথম প্রকাশের শতবর্ষ স্মরণে সুদীপ্ত চক্রবর্তীর অনবদ্য কলমে অনূদিত।
বারীন সাহা
‘তের নদীর পারে’ ছবির সম্পূর্ণ চিত্রনাট্য
বারীন সাহা নামে এক চলচ্চিত্রকার যে প্রায় একশো বছর আগে জন্মেছিলেন এই দেশে, আর তিনি যে বছর-ষাটেকেরও আগে একটি পূর্ণদৈর্ঘ্যের আধুনিক বাংলা ছবি পরিচালনা করেছিলেন, যে-ছবি বিষয়ে ও প্রয়োগে এখনও সমসাময়িক, আধুনিকতম— সে-কথা মনে রাখার লোক আজ বিরল হয়ে এসেছে।
এই ছবি এখন দেখতে পাওয়াও কঠিন, বছর-কুড়ি আগে এর একটি মাত্র প্রিন্ট ছিল পুনে ফিল্ম ইনস্টিটিউটের আর্কাইভে, কিন্তু এখন তা-ও আর আছে কি না, বা কী অবস্থায় আছে, আমরা জানি না।
চোখে দেখার সুযোগ প্রায় না-থাকলেও অন্তত মনে-মনে এই আশ্চর্য ছবিটি দেখার জন্য অতএব এখন শুধু এই চিত্রনাট্যটি থাকল।
কিন্তু বলে নেওয়া ভালো যে, এই চিত্রনাট্য স্বয়ং পরিচালকের নিজের হাতে লেখা নয়, বা তাঁর শুটিং স্ক্রিপ্ট নয়। পুনের ফিল্ম আর্কাইভ থেকে ছবিটি যোগাড় করে স্টেইনবেক যন্ত্রে তা চালিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ ডিটেলে এই চিত্রনাট্য একদা প্রস্তুত করেছিলেন পিনাকী চট্টোপাধ্যায়। ঐ ইনস্টিটিউটের সম্পাদনা বিভাগে ২০০৪-এ তিনি শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তাঁকে তখন সাহায্য করেছিলেন প্রমিতা ভট্টাচার্য আর বিশেষত ছবির স্টিল নির্বাচনে সূর্যদীপ রায়। নির্বাচিত সেই সমস্ত ছবি এই বইয়ে যথাস্থানে ছাপা হয়েছে। বস্তুত এই একটি কাজের জন্য বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাস তাঁদের কাছে চিরঋণী হয়ে থাকবে বলে মনে হয়।
একই সঙ্গে বেরিয়েছে বারীন সাহার নিজের লেখাপত্র, কথালাপ ও সাক্ষাৎকার এবং বারীন সাহা-কে নিয়ে তাঁর অনুরাগী, সমধর্মী-সহকর্মী ও সমালোচকদের লেখাপত্রের আর-একটি সংকলন : ‘চলচ্চিত্রাক্ষর’। নতুন প্রজন্মের পাঠক যদি দুটি বই একসঙ্গে পড়েন, তবে বারীন সাহা-কে খানিকটা ছুঁতে পারবেন।
বারীন সাহা
চলচ্চিত্রাক্ষর
‘তের নদীর পারে’র মতো অদ্বিতীয় ছবির পরিচালক বারীন সাহা সারা জীবনে ছবি করার সুযোগ পেয়েছেন ঐ একটাই, তার সঙ্গে ‘চেঞ্চু’ বা ‘ভাসা’র মতো দুটি ডকুমেন্টারি আর ‘শনিবার’-এর মতো স্বল্প দৈর্ঘ্যের একটি ছবির কথা ধরলে যা দাঁড়াবে, তা দিয়ে বাংলা ছবির জাবদা ইতিহাসে তাঁর নাম লেখার মতো প্রায় কোন জায়গাই জোটে না। পাশাপাশি এ কথাও স্মর্তব্য যে বারীন সাহা তাঁর সময়ে কেতাবি মতেই রীতিমতো শিক্ষিত পরিচালক ছিলেন। খোদ ইয়োরোপে গিয়ে চলচ্চিত্রের পাঠ নিয়েছিলেন হাতে-কলমে, কতিপয় তাবড় পরিচালককে দেখেছিলেন কাছ থেকে, এমনকী পেশাদার হিসেবে ঐ বিদেশেই কাজ করেছিলেন সহকারের। তাঁর স্থান-কালের পরিসরে এ যোগ্যতা আর কার ছিল? কার ছিল এই অভিজ্ঞতা? তবু কেন আর ছবি করলেন না তিনি, কেন তার কোন সুযোগ পেলেন না? ছবি করলেন না তো সারা জীবন করলেন কী? তার কিছু-কিছু সংকেত মিলবে এই বইতে। অদ্বিতীয় এই চলচ্চিত্র-পরিচালকের লেখা কয়েকটি প্রবন্ধ, সাক্ষাৎকার আর কথোপকথনের বয়ান নিয়ে এই সংকলন। সেই সঙ্গে এই আশ্চর্য মানুষটির জীবন আর কাজকে বোঝার জন্য রয়েছে তাঁর অনুরাগী ও সহকর্মী-সহমর্মী কয়েকজনের লেখা।
সুহৃদকুমার ভৌমিক
বঙ্গ-সংস্কৃতিতে আদিবাসী ঐতিহ্য
বঙ্গ-সংস্কৃতির মধ্যে বিচিত্র জাতি-উপজাতির মিলিত চিন্তারাশি, চেতনাপ্রবাহ, ধ্যান ও ধারণা একাকার হয়ে লোকজীবনের সংস্কৃতিতে বিবর্তিত হচ্ছে। সহজ কথায় বলা যায় যে বঙ্গ-সংস্কৃতির গৌরব, বৈচিত্র্য এবং তার সমন্বয়িত রূপের অনেকটাই লোকসংস্কৃতি থেকে উঠে এসেছে, যার ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে বাংলার আদি জনগোষ্ঠীর হাতে। এই সমন্বয়িত সংস্কৃতির বৈচিত্র্যসমূহের বীজ ও প্রাণশক্তিকে শনাক্ত একমাত্র উপায় হল বাঙলার প্রত্যন্ত ভূমিতে আদিবাসী নামাঙ্কিত যে-সমস্ত জনগোষ্ঠী রয়েছে তাদের রুদ্ধ দ্বারগুলিকে উদ্ঘাটিত করা।
এই আদি জনগোষ্ঠীর রুদ্ধ দ্বারসমূহ উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে তাঁদের জীবন আর সংস্কৃতি বিষয়ে এক গুচ্ছ প্রামাণিক প্রবন্ধের সংকলন। যাঁর লেখা, এ বিষয়ে তাঁর চেয়ে ভালো বোধ করি আর কেউ জানেন না। সংযোজিত চিত্রনথির সংকলনটিও উল্লেখযোগ্য।
ছবি-কথায় আব্বাস কিয়ারোস্তামি
চেরির স্বাদ ও অন্যান্য
সংকলন ও ভাষান্তর : সন্দীপন ভট্টাচার্য
কিয়ারোস্তামি-র ছবির ঠিক বর্ণনা বা ব্যাখ্যা ইত্যাদি হয় না। একমাত্র উপায় হল তাঁর ছবি দেখা। শুধু চোখে দেখাও নয়, কিয়ারোস্তামি চান তাঁর ছবির অদৃশ্য নানান অংশ দর্শক নিজের মনে-মনেও খানিকটা দেখুন, অদৃশ্য ফাঁকগুলো মনে-মনে খানিকটা পূরণ করে নিন। তাঁর ছবি দেখে লোকে খুব তৃপ্ত বা সন্তুষ্ট হোক, এ তিনি চাননি। বরং চেয়েছেন তাদের অস্বস্তি হোক, আর তা কাটাতে তারা বাধ্য হোক তাঁর ছবি নিয়ে ভাবতে, কথা বলতে।
জীবিত থাকতেই তাঁর নাম চলচ্চিত্রের মহান সব স্রষ্টাদের সঙ্গে একই আসনে সংরক্ষিত। যে-জায়গা থেকে গোদার বলেছিলেন, “… চলচ্চিত্রের শেষ কিয়ারোস্তামি-তে।”
এ বইয়ে কিয়ারোস্তামি-র সঙ্গে সাত সাক্ষাৎকারীর কথাবার্তার সম্পূর্ণ বয়ান এবং আরও সাত সাক্ষাৎকার থেকে প্রশ্ন বাদ দিয়ে শুধু কিয়ারোস্তামি-র নিজের কথার অংশবিশেষ রয়েছে। সেই সঙ্গে আছে আর-এক যুগান্তকারী চলচ্চিত্রকার আকিরা কুরোসাওয়া-র সঙ্গে কিয়ারোস্তামি-র কথোপকথনের বয়ান। বছর-সাতেক আগে এ বই প্রথম প্রকাশের সময় কিয়ারোস্তামি-র কবিতার তেমন অনুবাদ বাংলায় হয়নি। বলা যায়, বাংলাভাষী পাঠকের কাছে সেই ছিল কবি কিয়ারোস্তামি-র প্রথম আবির্ভাব। ইতিমধ্যে অনেকেই তাঁর কবিতার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন, অনেকে অনুবাদ করেছেন, বই করেছেন, এ কারণে এই বইয়ে কবিতার অংশ সম্পূর্ণত বাদ দেওয়া হল। থাকল কেবল চলচ্চিত্রী এবং অংশত আলোকচিত্রী আব্বাস কিয়ারোস্তামি-র কথা।
দক্ষিণারঞ্জন শাস্ত্রী
ভারতীয় জড়বাদ : সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
সেই কোন্ প্রাচীন কালেও কিছু মানুষ ছিলেন যাঁরা যাচাই করে গ্রহণ করায় বিশ্বাস করতেন, প্রতিবাদে সরব হতেন। প্রশ্ন ও তর্ক, বিচার ও বিবেচনা, আচার ও অভ্যাসের প্রয়োগের মাধ্যমে তাঁরা তুলে ধরেছিলেন প্রকৃত স্বাধীন চিন্তার পতাকা। সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ভাবে দেখলেও স্পষ্ট অনুধাবন করা যায় এই অনুশীলনের বৌদ্ধিক, যৌক্তিক, সামাজিক এবং গণতান্ত্রিক প্রয়োজনীয়তা। আমাদের বোঝা উচিত, পুরাতন সেই মুক্তচিন্তকেরাই বীজ বপন করেছিলেন সভ্যতার এক অপরিহার্য আঙ্গিকের— এ ছিল মানুষের যাবতীয় মানসিক ক্রমোন্নতির এক অমূল্য উপকরণ। ভারতীয় জড়বাদের ইতিহাস নিয়ে সুপণ্ডিত দক্ষিণারঞ্জন শাস্ত্রী মহাশয়ের পথিকৃৎ গবেষণা।
ভাষান্তর : সুদীপ্ত চক্রবর্তী
জাঁ-পল সার্ত্র
গণহত্যা
ভিয়েতনামে মার্কিন যুদ্ধাপরাধের বিচার করতে গণ-উদ্যোগে গঠিত ট্রাইবুনাল-এর (বার্ট্রান্ড রাসেল-এর সক্রিয় উদ্যোগে হয়েছিল বলে যাকে সংক্ষেপে রাসেল ট্রাইবুনাল-ও বলে) দ্বিতীয় অধিবেশনের (ডেনমার্ক, ২০ নভেম্বর – ১ ডিসেম্বর ১৯৬৭) একেবারে শেষ পর্বে সার্ত্র গণহত্যা নিয়ে যে-অসাধারণ ভাষণটি দিয়েছিলেন, বাংলায় ভাষান্তরিত তার বয়ানটিই এ বইয়ের একমাত্র উপজীব্য। আজও এর প্রাসঙ্গিকতা কিছুমাত্র হারায়নি। ভাষান্তরের প্রেরণা সেটাই।
শুভেন্দু দাশগুপ্ত গ্রন্থিত
গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কার্টুনে হিন্দুত্ববাদ
হিন্দুত্ববাদের সামাজিক কাঠামোয় নানান ধর্মীয় অনুশাসন, নানা বিধান, আচার-আচরণ, নিষেধের বেড়াজাল। হিন্দত্ববাদের রাজনৈতিক কাঠামোয় দেশপ্রেম, যা আসলে প্রশ্নহীন আনুগত্যের রকমফের। আমাদের দেশে এখন সেই হিন্দুত্ববাদীদের দাপট। তারাই এখন কেন্দ্রীয় শাসনে, ক্ষমতায়। সেই সূত্রেই আসছে নানান ফতোয়া, আনুগত্য প্রকাশের চাপ। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদও হচ্ছে। নানা রূপে, নানা ধরনে। একটা ধরন হল কার্টুন। আর সেখানেই পাওয়া গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরকে। তাঁর আঁকা কার্টুনের বিষয়ে আর এখনকার বিষয়ে দেখা যাচ্ছে আশ্চর্য মিল। একশো বছর আগেও যা সত্যি ছিল, দেখা যাচ্ছে এখনও তার কোন বদল ঘটেনি। দু-ভাগে সাজানো এই বইয়ে সংকলিত কার্টুনে পাঠকের তা খুঁজে নিতে অসুবিধে হবে না কোন।
নতুন মুদ্রণে ৮টি কালার প্লেট যুক্ত হল। বইপত্তর-এর বই।
মীরা মুখোপাধ্যায়
বিশ্বকর্মার সন্ধানে
শিল্পকর্ম আর কারুকর্মের মধ্যে তৈরি-করা কোন রকম বিভেদ মানতেন না তিনি, এই বইয়ের লেখক, এ দেশের অন্যতম প্রধান ভাস্কর মীরা মুখোপাধ্যায়। সে কারণেই এক দীর্ঘ সময়কাল জুড়ে তিনি গভীর জিজ্ঞাসা নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছিলেন বিশ্বকর্মার সন্ধানে। বিশ্বকর্মা, যিনি বিশ্বের সকল কর্মের দেবতা। ভূমিকায় তিনি লিখেছেন, ‘আমার বিষয়বস্তুকে কোন ইতিহাসে পাইনি, যা পেয়েছি তা অস্পষ্ট এবং অলীক হিসেবে পুরাণ, মহাভারতে বিরাজ করেছে। যখন মুখে-মুখে ঘুরে-ঘুরে বিশ্বকর্মাদের কাছ থেকে কিছু-কিছু জেনেছি, তখন বুঝতে পেরেছি অতি গভীর তার মূল, প্রায় আমাদের জানিত সভ্যতার শুরু থেকেই এর সূচনা।’ এই বইয়ে তাই বাস্তবের সঙ্গে কল্পকাহিনী, ইতিহাসের সঙ্গে পুরাণ, সমকালের সঙ্গে লোককথা এমন ভাবে মিশে আছে যে ভ্রম হয় কোনটা প্রকৃত বাস্তব, আর কোনটাই বা আসল ইতিহাস। প্রকৃতপক্ষে মীরা মুখোপাধ্যায়ের জীবনব্যাপী জিজ্ঞাসা ও গবেষণার ফসল এ বই।
প্রথম বইপত্তর সংস্করণ, ১২৮ পৃষ্ঠা
বাংলা কার্টুনে ভোট
গ্রন্থনা : শুভেন্দু দাশগুপ্ত
ভোট গম্ভীর ব্যাপার। ভোট মজার ব্যাপার। ঠাট্টা-তামাশার ব্যাপার। বিষয় নিয়ে ব্যঙ্গ। কথায়, প্রতি দিনের প্রতি জনের কথায়। আঁকায়, ব্যঙ্গচিত্রীদের আঁকায়।
সেই কবে থেকে ভোট নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র। যবে থেকে ব্যঙ্গচিত্র ছাপা হওয়া বাংলা পত্রিকায়। ১৮৭৪ সাল থেকে। প্রথম ‘বসন্তক’ পত্রিকায়।
ভোট নিয়ে, ভোটের বিষয় নিয়ে সাধারণজনের হাসি ঠাট্টা মশকরা তামাশা বিদ্রূপ ব্যঙ্গচিত্রীর আঁকায়, কথায় চলে আসে। হালকা চালে। সমালোচনায়। যেমন হয় কার্টুনে। বাইরে থেকে দেখে নিলে, পড়ে ফেললে একরকম। ভিতরে ঢুকলে, বুঝে নিলে অন্যরকম। ব্যঙ্গচিত্রী সমালোচক।
প্রথম পর্বের সাজিয়ে নেওয়া কার্টুন ছাপানোর সময় ধরে।
দ্বিতীয় পর্বে দেওয়া গেল বাংলাদেশের শিল্পী রফিকুন নবী-র ভোট নিয়ে আঁকা কিছু কার্টুন।
রফিকুন নবী-র একটি জনপ্রিয় কার্টুন-চরিত্র ‘টোকাই’। টোকাইকে নিয়ে আমরা আগেই একটি বই বানিয়েছি। তাঁর আঁকা আর-একটি কার্টুন-চরিত্র ‘ভোটারালী’। টোকাইয়ের মতো ভোটারালীও না-মানুষদের সঙ্গে কথা-বলাবলি করে। সে কখনও গাঁয়ে, কখনও শহরে। কখনও সে প্রশ্ন করে, কখনও উত্তর দেয়। সে-সব প্রশ্ন আমাদেরই, উত্তরও আমাদেরই। সাধারণ মানুষদের।
এ বাংলায় ভোটারালী-কে আনা গেল এবার।
ভিনসেন্ট ভান গখ – পল গগ্যাঁ
দুই শিল্পীর চিঠি : পারস্পরিক পারম্পরিক
পল গগ্যাঁ ও ভিনসেন্ট ভান গখ-এর প্রথম দেখা হয় প্যারিসে, ১৮৮৭ সালের শেষদিকে। প্রাথমিক পরিচয়ের পরের পর্যায় শুরু হয় পরস্পরের ছবি বিনিময় দিয়ে, আর সেই সূত্রেই শুরু হয় চিঠির আদানপ্রদান। ঘটনাবহুল তাঁদের বন্ধুত্বের স্থায়িত্ব মাত্রই দু-আড়াই বছর, কিন্তু উভয়ের কাছেই এই সময়পর্ব গুরুত্বপূর্ণ। এর শেষ হয় গখ-এর স্বেচ্ছামৃত্যুতে, আর তার কয়েক মাস পরেই গগ্যাঁ তাঁর জীবনের ও শিল্পদর্শনের শেষ গন্তব্য তাহিতি-র উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
এক অর্থে এই চিঠিগুলি পাশ্চাত্যের শিল্প-ইতিহাসের এক বিশেষ পর্বের প্রাথমিক দলিলও। দুর্ভাগ্যবশত, দুনিয়া জুড়েই মানুষ শিল্প নিয়ে নানা গালগল্পে অভ্যস্ত। এই চিঠিগুলি হতে পারে তার পালটা এবং প্রকৃত বয়ান। শিল্পীদের নিজেদের বয়ানেই তাঁদের দৈনন্দিন জীবন, কাজ ও ভাবনার কথা জানা সব সময়েই ভালো। বিস্ময়কর যে শরীর-স্বাস্থ্যের সাংঘাতিক অবস্থা এবং চিরদারিদ্র্যের মধ্যেও এই দু-জন শুধু ছবিই আঁকেননি, সেই সঙ্গে তাঁদের প্রতিদিনের জীবন ও ভাবনাকে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশদে বর্ণনা করে গেছেন। একদিক থেকে এই সব চিঠি হল তাঁদের শিল্পভাবনার তাত্ত্বিক দলিল, তাঁদের শিল্প-ইস্তাহারও।
উপস্থাপনার দিক থেকে এ বই একেবারেই পরীক্ষামূলক, গোটা বইটি মুখবন্ধ খামের মতো, সচিত্র গোটা বইটি তার মধ্যে বুনে দেওয়া, খাম খুলে চিঠি পড়ার মতোই এ বই পড়তে হবে। নিঃসন্দেহে, কোন বই এর আগে ঠিক এ ভাবে এই ভূখণ্ডে প্রকাশিত হয়নি।
নোকতা (বাংলাদেশ)-এর বই। প্রথম সংস্করণ
আপনাকে বলছি স্যার
বারবিয়ানা স্কুল থেকে
ভূমিকা ও ভাষান্তর : সলিল বিশ্বাস
ইতালির টাসকানি প্রদেশে মুজেল্লো অঞ্চলের পার্বত্য এলাকায় গোটা-কুড়ি খামার নিয়ে গঠিত একটি জনবসতি— বারবিয়ানা। জায়গাটা রুক্ষ অথচ সুন্দর। ছোট্ট একটি গির্জা আছে এখানে। ১৯৫৪ সালে পাদ্রি দন লোরেনজো মিলানি আসেন গির্জাটির ভারপ্রাপ্ত হয়ে। বারবিয়ানাতে এসে লোরেনজো মিলানি দেখলেন এ অঞ্চলের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার জগৎ বলতে প্রায় কিছুই নেই। বেশির ভাগ ছেলেমেয়েই হয় পরীক্ষায় ফেল করে স্কুল ছেড়ে দিয়েছে, অথবা যেভাবে স্কুলে শিক্ষাদান করা হয় সে বিষয়ে তাদের তিক্ততার শেষ নেই। মিলানি জড়ো করলেন দশটি ছেলেকে— এগারো থেকে তেরো বছর তাদের বয়স। তাদের দৈনন্দিন জীবনের বাস্তব সমস্যাবলি নিয়ে অনুশীলন আর সে-সব সমস্যার ভিতরে ঢোকার চেষ্টায় কাটত অনেকটা সময়। এই কাজের মধ্য দিয়ে এক বছর সময় ধরে বিশেষ একটা পরিকল্পনার রূপায়ণ হিসাবে এই স্কুলের আট জন ছাত্র ‘আপনাকে বলছি স্যার’ (Letter to a Teacher) বইটি লিখেছিল।
দরিদ্র, গ্রাম্য স্কুলের ছেলেদের লেখা এই বই ‘আপনাকে বলছি স্যার’ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন মানুষের জীবনে আশ্চর্য পরিবর্তন এনে দিয়েছে। প্রায় সব দেশের শিক্ষাব্যবস্থার বিত্ততোষণ আর মধ্যবিত্ত মানসিকতা সৃষ্টির প্রক্রিয়ার উপর এই বইয়ের সরাসরি আক্রমণই দেশে-দেশে এই বইয়ের জনপ্রিয়তার প্রধান কারণ। এই বইয়ের ‘আমি’ আটজন তরুণ লেখকের সম্মিলিত ব্যক্তিত্ব, আর ‘আপনি’ হলেন তাদের পরিচিত সকল শিক্ষক।
সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর
ফ্যাসিজম
সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা এই বই বাংলা ভাষায় লিখিত, মুদ্রিত ও প্রকাশিত প্রথম ফ্যাসিবিরোধী বই। ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত হলেও এর প্রস্তুতি চলেছিল ইতালিতে সৌম্যেন্দ্রনাথের বসবাসকালে। সোভিয়েত রাশিয়ার পর তাঁর রাজনৈতিক কাজকর্মের মূল কেন্দ্র ছিল জার্মানি। সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তিনি ইতালির আল্পস ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের স্যানাটরিয়ামে চিকিৎসার জন্য আসেন ১৯৩১ সালের শেষার্ধে। ইতালিতে তখন ঘোর ফ্যাসিস্ট যুগ। ফ্যাসিস্ট তত্ত্ব ও প্রয়োগের অনুসন্ধানে ব্যাপৃত হয়ে তার ফাঁকির দিকটা বুঝে নিতে তাঁর দেরি হয়নি।
মার্কসবাদী দৃষ্টিতে নিটোল যুক্তিতে ফ্যাসিস্ট তত্ত্বকে খণ্ডন করার সূত্রে এ বই আজ ঐতিহাসিক দলিল।
আমাদের দুর্ভাগ্য যে এ বইয়ের পুনঃপ্রকাশ ও পুনঃপাঠ বারে-বারেই জরুরি হয়ে পড়ে।
সংবাদ-চিত্রকর চিত্তপ্রসাদ
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : শুভেন্দু দাশগুপ্ত
এই বইটা চিত্তপ্রসাদকে নিয়ে, চিত্তপ্রসাদের আঁকা বিশেষ ধরনের ছবি নিয়ে। ১৯৪০-এর দশক। চিত্তপ্রসাদ তখন কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়ার সদস্য। পার্টি-কর্মী চিত্তপ্রসাদ কমিউনিস্ট পার্টির ইংরাজি ভাষায় প্রকাশিত পত্রিকা প্রথমে পিপল’স ওয়র, পরে নাম বদলিয়ে পিপল’স এজ-এ ছবি আঁকছেন। প্রতিবেদন লিখছেন। কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য চিত্তপ্রসাদ পার্টির কাগজের চিত্রকর, প্রতিবেদক-চিত্রকর। এই বইটা সেই সংবাদ-চিত্রকর চিত্তপ্রসাদকে নিয়ে।
চিত্তপ্রসাদ ছবিকে, চিত্রশিল্পকে কমিউনিস্ট পার্টির রাজনীতিকতা, রাজনীতিক আন্দোলন, রাজনীতিক প্রতিরোধের সঙ্গে যুক্ত করে দিয়েছেন। চিত্তপ্রসাদের ছবি রাজনৈতিক। এবং এই প্রত্যেকটি ছবি ও লেখার একটা রাজনৈতিক, ঐতিহাসিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পটভূমি রয়েছে। তার যতটা সম্ভব, এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। এই ছবিগুলির কয়েকটি নানা বইতে রয়েছে। বেশির ভাগই নেই। সেদিক থেকে ভাবলে বেশির ভাগ পাঠক এই সব ছবি এই প্রথম দেখবেন।
কমিউনিস্ট পার্টির কাগজে ছাপা লেখাগুলি তো কমিউনিস্ট ভাবনার ইতিহাস— কখন, কোন্ সময়ে, কী বিষয়ে, কেন, কমিউনিস্ট পার্টি এমন ভেবেছে, লিখেছে, জানিয়েছে। লেখার পাশে ছবিও ইতিহাস আঁকে। ইতিহাস ব্যাখ্যা করে অন্য এক ভাষায়, অন্য এক ধরনে। চিত্তপ্রসাদ ছবি এঁকে সেই ইতিহাসের কোথাও সহকারী, কোথাও স্বাধীন রচয়িতা। সেই ইতিহাস চিত্তপ্রসাদ যেভাবে দেখেছেন, অনুভবে, ব্যাখ্যায়, পার্টির রাজনীতিক ধারণায়, নিজের রাজনীতিকতায়, শিল্পীসত্তায়, তা-ই এঁকে রেখেছেন পত্রিকার পাতায়, যা এখন ইতিহাসের মহাফেজখানায়।
এ-ও এক ধরনের চিত্রপ্রদর্শনী। বিষয় যে-ভাবে আছে সে-ভাবে নয়, যে-ভাবে বিষয়কে দেখাতে চাওয়া, সে-ভাবে আঁকা। বাস্তবে যে-ভাবে এল, আছে, আসছে, আসবে, শুধু সে-ভাবেই নয়, বাস্তব যেমন হওয়াতে চায় শিল্পী সেই ভাবে।
বইপত্তর (পশ্চিমবঙ্গ) ও নোকতা (বাংলাদেশ) যৌথ প্রকাশনা
শ্রীগিরিশচন্দ্র বেদান্ততীর্থ
বঙ্গে দুর্গোৎসব
১৩৩৩ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত এই পুস্তকের নিবেদন অংশে গিরিশচন্দ্র বেদান্ততীর্থ লিখেছিলেন, “বাঙ্গালী পাঠকপাঠিকাগণ ইহা পাঠ করিয়া দুর্গাপূজা–রহস্য ও বাঙ্গালীর পুরাতন অবস্থা কিয়ৎপরিমাণে পরিজ্ঞাত হইলেও স্বকীয় পরিশ্রম… সফল মনে করিব।”
গিরিশচন্দ্রের জন্ম ময়মনসিংহে। অধ্যাপনা করেছেন রাজশাহীর রানি হেমন্তকুমারী সংস্কৃত কলেজে। রাজশাহীর বরেন্দ্র অনুসন্ধান সমিতির সঙ্গেও তিনি যুক্ত ছিলেন। এই পুস্তকে তিনি মহিষাসুরের জন্মবৃত্তান্ত, কাত্যায়নী নাম-নিরুক্তি, মহিষাসুরের স্বপ্নবৃত্তান্ত, ব্রহ্মশাপবৃত্তান্ত, দেবীর বর্ণ, মৃন্ময়ী মূর্ত্তিতে দুর্গাপূজা, বিসর্জ্জন, দেবীপুরাণ ও কালিকাপুরাণ, দুর্গোৎসবের কাল, নবদুর্গা, পদ্ধতিবিবরণ, দুর্গারহস্য ইত্যাদি বিবিধ বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
তাঁর রচিত অন্যান্য গ্রন্থ : কৌলীন্যমার্গ রহস্য, সরস্বতী তন্ত্র, প্রাচীন শিল্প পরিচয়। সম্পাদনা করেছেন : পুরুষোত্তম ভাষাবৃত্তি, তারাতন্ত্র, কুলচূড়ামণিতন্ত্র ইত্যাদি। ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’তে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর নানা প্রবন্ধ।
প্রথম বইপত্তর সংস্করণ, ৬৪ পৃষ্ঠা
সুহৃদকুমার ভৌমিক
ঝাড়খণ্ডে মহাপ্রভু
ঝাড়খণ্ড নামটি নূতন নয়। চৈতন্য মহাপ্রভুর সময়ে এই অঞ্চল এই নামেই পরিচিত ছিল। ২৩শ জৈন তীর্থঙ্কর পাশ্বর্ণনাথ পাহাড়ে নির্বাণ লাভ করেন। ২৪শ জৈন তীর্থঙ্কর মহাবীর বা বর্ধমানস্বামী জৈন ধর্ম প্রচারকল্পে শিষ্যবৃন্দ-সহ বারো বছর ‘লাড়া’ বা ‘রাঢ়’ভূমিতে ভ্রমণ করেছিলেন। ৫৪৭-সংখ্যক বিশ্বম্ভর জাতকের কাহিনী অনুসারে ভগবান বুদ্ধ পূর্বজন্মে বঙ্কুগিরি পাহাড়ে তপস্যারত অবস্থায় মারা যান। বঙ্কুগিরি বর্তমান বাঁকুড়ার শুশুনিয়া পাহাড়। বুদ্ধদেব বোধিলাভের পর এই পাহাড়ে এসেছিলেন। জনশ্রুতি যে রাঁচি জিলার নির্জন জনহা জলপ্রপাতের এক গুহায় গৌতম বুদ্ধ কিছুদিন তপস্যা করেছিলেন। ভগবান বুদ্ধের বহু কাল পরে শ্রীচৈতন্যও তাঁর ধর্মপ্রচারের ক্ষেত্র হিসাবে রাঢ়ভূমি তথা ঝাড়খণ্ডকে গ্রহণ করেছিলেন। কেন মহাপ্রভু অবহেলিত আদিবাসী অধ্যুষিত ঝাড়খণ্ডে প্রেমধর্ম প্রচারের জন্য এসেছিলেন, কী তার পটভূমি আর তাঁর প্রভাবই বা কত স্থায়ী হয়েছিল– তারই ঐতিহাসিক ও তুলনামূলক আলোচনা এই গ্রন্থের বিষয়।
ভিনসেন্ট ভান গখ
এ ভাবেই চলে যেতে চাই : শেষ সাত মাসের চিঠি
১ জানুয়ারি-২৩ জুলাই ১৮৯০
১৮৯০ সালের ২৯ জুলাই মাত্র ৩৭ বছর বয়সে ভিনসেন্ট ভান গখ মারা যান। উনিশ শতকের আরও অনেক শিল্পীর মতো তাঁর জীবনও শেষ হয়েছিল অসহনীয় দারিদ্র্য আর অসুস্থতার বিরুদ্ধে প্রায় অসম সংগ্রাম করে। মারা যাওয়ার সময়ে নিতান্ত আত্মপরিজন আর পরিচিতরা ছাড়া কেউ তাঁর নাম জানতেন না। পরবর্তী একশো বছরে অবশ্য তাঁর নাম একেবারেই শোনেননি, পুঁথিশিক্ষিত এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন।
তাঁর বিখ্যাত সব ছবি গত একশো বছরে কোটি-কোটি বইয়ের লক্ষ-লক্ষ কপিতে ছাপা হয়েছে, আর তাঁর ছবির অনুপুঙ্খ নিয়ে লেখা হয়েছে অন্তত কয়েক কোটি প্রবন্ধ। অন্য দিকে, তাঁর জীবন নিয়েও রচিত হয়েছে জনপ্রিয় উপন্যাস, হয়েছে ফিচার ফিল্ম। আবার, তাঁর জীবন ও ছবি পরবর্তী কালে নানা মাধ্যমের নানান শিল্পীকে বিভিন্ন সময়ে এতটাই অভিভূত ও প্রাণিত করেছে যে সেই সূত্রেও রচিত হয়েছে অনেক গান, কবিতা, ছবি, গদ্য বা তথ্যচিত্র।
এ সবই তাঁকে বোঝার পক্ষে নিশ্চয়ই অপরিহার্য, কিন্তু একমাত্র ছবির প্রতিলিপি ছাড়া এর কোথাও স্বয়ং ভিনসেন্ট নেই। তিনি আছেন, এবং খুব তীব্র ভাবে আছেন একমাত্র তাঁর লেখা অজস্র চিঠিতে। দিনতারিখ মিলিয়ে বস্তুত সেখানে তাঁর নিজের হাতে লেখা আছে তাঁর জীবন ও কাজের সমূহ সংকেত, প্রকৃত আর প্রাকৃত যাবতীয় বিবরণ। বস্তুত এই হল সেই মৌলিক উৎস, ভিনসেন্টকে জানতে-বুঝতে যেখানে ফিরে-ফিরে যেতে হয় জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক থেকে সিরিয়াস প্রাবন্ধিক, সকলকেই।
এ বইয়ে আমরা সেই উৎসে পৌঁছনোর চেষ্টা করেছি। ১৮৯০-এর জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত তাঁর লেখা মোট সাঁইত্রিশটি চিঠি এ বইয়ে আছে। মাঝে মাস-দেড়েকের ফাঁকও আছে, যখন তিনি ঠিক লেখার অবস্থায় ছিলেন না। এর অধিকাংশই তাঁর সহোদর ভাই থিওডোর ভান গখ-কে লেখা। কয়েকটি আছে মা আর বোনকে লেখা। জন রাসেল, আলব্যের অ্যরিয়ের ও পল গঁগ্যা-কে লেখা চিঠি আছে একটি করে। আর আছে ঐ শেষের সাত মাসে তাঁর আঁকা ছবির শাদা-কালো আর রঙিন অনেক প্রতিলিপি।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আছে আমার ছবি : নির্বাচিত পত্রাংশে চিত্রকরের আত্মকথা
“এই টলমলে অবস্থায় এখনো দুটো পাকা ঠিকানা পেয়েছি আমার বানপ্রস্থের— গান আর ছবি। এদের উপরে বাজারের বস্তাবন্দীর ছাপ পড়েনি।… কলার সকল বিভাগে আমি ব্রাত্য…। আছে… আমার ছবি। কোথা থেকে দেখা দিতে এসেছে এই শেষ বেলায়, যখন রোদ্দুর পড়ে এল। আমার এই রেখানাট্যের নটী আর কারো চোখে ধরা দেয় কিনা তার সঠিক খবর পাইনে।… প্রশংসা আমার মনকে আঁকড়ে ধরেনি… আমার ছবির প্রশংসা টেকসই কিনা সে তর্ক বাজারে ওঠেনি, আমার মনেও না। আমার চৈতন্য-অন্তঃপুরে রেখারূপের জাদু নর্তকীরা একদিন পর্দানশীন ছিল, আজ পর্দা সরিয়ে বেরিয়ে এসেছে। আমার কাছে এই অদ্ভুত প্রকাশলীলার আনন্দই যথেষ্ট।… আমার ছবির খ্যাতির সম্বন্ধেও সেই কথা।… তার… অখ্যাতির গৌরবে সে আছে ভালো…।”
প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে ছবি নিয়ে তাঁর এমনই সব অনুভব, ভাবনা, উপলব্ধি, উদ্বেগ, হতাশা আর উৎফুল্লতার কথা তিনি লিখেছেন অন্তরঙ্গজনকে লেখা তাঁর অজস্র চিঠিতে। তার থেকে নির্বাচন করে এই সংকলন– চিত্রকর রবীন্দ্রনাথের আত্মকথা।
সংকলন ও বিন্যাস : সন্দীপন ভট্টাচার্য।
শুভেন্দু দাশগুপ্ত সম্পাদিত
বাংলা পোস্টার : দুই বাংলার লেখা ও ছবি
পোস্টারকে শিল্পকলার ইতিহাস সেভাবে জায়গা দেয়নি, দেয় না। তাই ‘দলিত’ পোস্টারকে ‘ব্রাহ্মণত্ববাদী প্রতিষ্ঠানিকতা’র বাইরে জায়গা খুঁজে নিতে হয়। রাজ-নীতিক আন্দোলনে, প্রতিবাদে, মিছিলে, ঘোষণায়, যাত্রায়, সার্কাসে, জলশায়, ছোট অনুষ্ঠানের প্রচারে, ছোট সংস্থার শিল্পনির্মাণে, এমন-এমন সব বিষয়ে। তাই বাংলা পোস্টার নিয়ে বাংলায় বই লেখা হয় না, হয়নি, প্রবন্ধ হাতে-গোনা।
পোস্টার এক যৌথ শিল্প। অংকনশিল্পী, অক্ষরশিল্পী, বিন্যাসশিল্পী, মুদ্রণশিল্পী— এঁদের সমবেত সৃষ্টি। মুদ্রণশিল্পের ইতিহাসের সাথে পোস্টারশিল্পের ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে। পোস্টার-শিল্পের ইতিহাস পড়লে মুদ্রণশিল্পের ইতিহাস পড়া হয়ে যাবে। একই ভাবে সময়কাল সাজিয়ে রাজনৈতিক পোস্টার পড়লে রাজনীতির ইতিহাস পড়া হয়ে যায়। এ ভাবেই কোন অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ইতিহাস, সামাজিক ইতিহাস চর্চার অন্যতম উপাদান সাংস্কৃতিক পোস্টার, সামাজিক বিষয়ের পোস্টার। এ ভাবেই চলে আসে পোস্টার থেকে পড়ে নেওয়া ছবির ইতিহাস, দেখানো ছবির ইতিহাস, বাক্যের ইতিহাস, লেখা কথা শব্দ শ্লোগানের ইতিহাস।
সব মিলিয়ে পোস্টার ইতিহাসের এক জরুরি উপাদান। বাংলা পোস্টার নিয়ে এই সংকলনে দর্শক ও পাঠক তার খানিক আন্দাজ পাবেন বলেই আমাদের ধারণা।
সুহৃদকুমার ভৌমিক
আর্য রহস্য
আর্য মানে যে কৃষক, স্থায়ী গৃহস্থ, সে-সম্বন্ধে সন্দেহ নেই। আর ঋগ্বেদের বিরাট অংশ হল চাষবাস বিষয়ক মন্ত্র। তাই য়ুরোপীয় কোন-কোন পণ্ডিত ঠাট্টা করে বলতেন, ঋগ্বেদ হল চাষার গান। এই উক্তিতে আমাদের অনেক পণ্ডিতের মনে কষ্টও হয়েছে। “বেদের বহু স্তোত্রে চাষের কথা আছে। ভূমি সুজলা সুফলা হয়, তাহার জন্য দেবতাদের নিকট অনেক প্রার্থনাও আছে। সুতরাং তাহাদের সিদ্ধান্ত হইল, বৈদিক স্তোত্রকারগণের যে সমাজ তাহা সভ্যতার আদিম বা চাষের স্তরে মাত্র উঠিয়াছিল। তাঁহারা মন্তব্য করিলেন, বৈদিক মন্ত্র সব চাষার গান।” কথাটা কিন্তু অমূলক নয়। কারণ শব্দবিচার করে আমরা জানতে পারব— আর্য শব্দের মৌলিক অর্থই হল কৃষক।
আজকের দিনে অধিকাংশ ভাষাবিজ্ঞানী পণ্ডিতই বলছেন, তামাম পৃথিবীতে যে-সমস্ত সংস্কৃত শব্দের অপব্যাখ্যা হয়েছে, তার মধ্যে ‘আর্য’ শব্দটি বোধ হয় সবচেয়ে অভাগা। এর পেছনে কাজ করেছে পাশ্চাত্যের গূঢ় রাজনৈতিক উদ্দেশ্য এবং সাম্রাজ্যবাদী বাসনা। সংস্কৃতিতত্ত্ব আর ভাষাতত্ত্বের সূত্রে আর্য জাতি সম্পর্কে প্রকৃত সত্যের উদ্ঘাটনই এই বইয়ের প্রধান উদ্দেশ্য। সব অর্থেই এ বই বিস্ফোরক বই, প্রচলিত ধ্যানধারণা নাড়িয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট।
প্রথম বইপত্তর সংস্করণ, ৬৮ পৃষ্ঠা
রামকিঙ্কর বেইজ
আমি চাক্ষিক, রূপকার মাত্র
বিশ শতকের প্রথম ভাগে এদেশে শিল্পকলার ক্ষেত্রে আধুনিকতার সূচনা হয়েছিল যাঁদের হাত ধরে, রামকিঙ্কর বেইজ তাঁদের অন্যতম। চিত্রকলা এবং ভাস্কর্য, উভয় মাধ্যমেই তাঁর কাজের পরিমাণ ও গুণমান বিস্ময়কর।
রামকিঙ্করকে বোঝার জন্য তাঁর কাজই যে বার-বার দেখতে হবে, বহু বার বহু সময় নিয়ে দেখতে হবে, তা বলাই বাহুল্য। সেই সঙ্গে ভালো হয় যদি তাঁর শিল্পদৃষ্টি ও শিল্পচিন্তা সম্পর্কেও খানিক ধারণা থাকে।
এই বইয়ে সংকলিত তাঁর নিজের পাঁচটি রচনা, একটি বক্তৃতার বয়ান, কয়েকটি চিঠি, চারটি সাক্ষাৎকার, এবং সেই সঙ্গে কয়েকটি সাক্ষাৎকারের বয়ান ভেঙে বিষয় অনুযায়ী সাজিয়ে তৈরি করা একটি রচনায় মনে হয় সে-ধারণা তৈরির ক্ষেত্রে কিছুটা সাহায্য মিলবে।
সন্দীপন ভট্টাচার্য সংকলিত ও সম্পাদিত
ছবির রাস্তা
ছবির রাজনীতি যেমন তার বিষয়ে আছে, তেমনি আছে তার ফর্ম-এ, তার রূপে, তার গড়নে। আছে তার উৎপাদনের ধরনে। যে-কোন শিল্পকর্মের মতোই ছবিও কী ভাবে উৎপাদিত হচ্ছে, কাদের জন্য হচ্ছে, কারা করছে, কোন্ পরিস্থিতিতে করছে, তার মাধ্যম কী, উপকরণ কী— সব-ই বিচার্য। এর পরে আছে তা দেখা এবং দেখানোর প্রশ্ন। ছবি যেহেতু দেখার জিনিশ, ফলে তা কী ভাবে দেখা হচ্ছে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। এই সব নিয়ে একদা হাতেকলমে কিছু কাজ করা হয়েছিল, ভাবা হয়েছিল তার চেয়ে বেশি— অনতি অতীতের সেই সব কাজ ও ভাবনার কিছু নথিপত্র এই বইয়ে একজায়গায় করে দেওয়া গেল।
ভোলানাথ ভট্টাচার্য
পট ও পটুয়া-কথা এবং অন্যান্য কথামালা
‘পট’ শব্দের উৎস, তার ইতিহাস; পটের প্রকরণ ও পরিবর্তনের ধারা; অনুরূপ শিল্পনমুনার সঙ্গে তার সাযুজ্য ও সম্পর্ক; পটচিত্রকর বা পটুয়াশিল্পীর পরিচয় এবং আনুষঙ্গিক যাবতীয় বিষয় নিয়ে এই বইয়ের নাম-প্রবন্ধটির তুল্য সার্বিক আলোচনা বাংলাভাষায় আর নেই। সেই সঙ্গে এই বইয়ে বিশদে রয়েছে কালীঘাট পটের কথা, রয়েছে মৃৎশিল্পের খণ্ডচিত্র ও কুমারটুলির কথা। আছে লিপি ও লিখনশিল্প এবং দেহাঙ্গচিত্রণের কথা। প্রবীণ লেখক ও গবেষকের গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধের সংকলন।
পরিবর্ধিত ও সচিত্র দ্বিতীয় সংস্করণ
THE ONLINE ART SHOP
www.boipattor.in
‘বইপত্তর’-এর ওয়েবসাইটে এবার চলে এল ‘ছবিপত্তর’-ও। ছবিপত্তর মানে একেবারে অরিজিনাল হাতে-আঁকা ছবি, আর ছবির প্রিন্ট, পোস্টার, আর সেই সঙ্গে সেরামিকস ও টেরাকোটার অরিজিনাল হাতে-গড়া মূর্তি বা ভাস্কর্য।
অর্থাৎ এবার ‘বইপত্তর’-এর সাইট থেকেই অনলাইনে এই সব ছবি এবং ভাস্কর্যও কেনা যাবে, এবং অনতিবিলম্বে তা সরকারি ডাকব্যবস্থার মাধ্যমে আপনার বাড়ির দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে। এ বিষয়ে আরও জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্ক-এ : https://www.boipattor.in/about/
এ সবের দামও থাকছে একেবারে সাধ্যের মধ্যে, ফলে ইচ্ছে করলেই নিজের চারপাশটা এবার আপনি একটু অন্যরকম, একটু সুদৃশ্য, একটু মনোরম করে তুলতে পারেন।
দেখুন এখনও পর্যন্ত আমরা আপনার জন্য কী-কী হাজির করতে পেরেছি। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, বলা বাহুল্য যে এই সংগ্রহ ক্রমে বাড়বে, নিয়মিত এখানে নতুন-নতুন কাজ যুক্ত হবে। ফলে মাঝে-মাঝেই আপনাকে সাইটটা একটু কষ্ট করে খুলে দেখতে হবে, এবং তার জন্য নিজের মোবাইলে বইপত্তর-এর অ্যাপ-টা ইনস্টল করে নেওয়া ভালো এই লিঙ্ক থেকে : https://play.google.com/store/apps/details?id=com.os.boipattor.
Owl 03
medium: terracotta
recent work by alakananda sengupta
size: 6 cm x 8 cm x 13 cm
Owl 02
medium: terracotta
recent work by alakananda sengupta
size: 6 cm x 6 cm x 14 cm
Owl 01
medium: terracotta
recent work by alakananda sengupta
size: 8 cm x 6 cm x 14 cm
Sandipan Bhattacharya
Untitled 5
Status : SOLD
Original Painting,
acrylic and water colour on handmade paper
23 cm X 12.5 cm
Sandipan Bhattacharya
Untitled 4
Original Painting,
acrylic and water colour on handmade paper
17.5 cm X 19 cm
free shipping
Sandipan Bhattacharya
Untitled 3
Status : SOLD
Original Painting,
acrylic and water colour on handmade paper
17.5 cm X 18 cm
Sandipan Bhattacharya
Untitled 2
Original Painting,
acrylic and water colour on handmade paper
17.5 cm X 18 cm
free shipping
Sandipan Bhattacharya
Untitled 1
Original Painting,
acrylic and water colour on handmade paper
17.5 cm X 17.5 cm
free shipping
Subhendu Dasgupta
Untitled 5
Original Painting,
Water colour on paper
24.5 cm X 22 cm
free shipping
Subhendu Dasgupta
Untitled 4
Status : SOLD
Original Painting,
Water colour on paper
25 cm X 22 cm
Subhendu Dasgupta
Untitled 3
Original Painting,
Water colour on paper
30 cm X 23 cm
free shipping
Subhendu Dasgupta
Untitled 2
Original Painting,
Water colour on paper
21 cm X 17.5 cm
free shipping
উদ্ধত, গম্ভীর মুখ দেখে ঠকবেন না— এই মুখগুলিই ভীরু। চিন্তার খুচরো ভাঙানি হল শব্দ। এক-একজন কথক আমাদের দেন সিকি … Read more
যারা নিজেদের ভগবান বানিয়ে তুলতে চায়, তারা চিরকালের মতো নিপাত যাক। ধর্ম নিয়ন্ত্রক নয়, সে উৎসাহিত করে অপরাধকে। প্রতিটি … Read more
এখন ‘বইপত্তর’ থেকে বই কেনায় বাড়তি কোন খরচ নেই। ‘বইপত্তর’ থেকে বই কিনলে বইয়ের মূল্য ছাড়া বাড়তি কোন টাকা দিতে … Read more
ডারউইনের সমুদ্রযাত্রা তরুণ চার্লস ডারউইন জানতেন না তাঁর জীবন নিয়ে কী করবেন। তাঁর বাবা তাঁকে উৎসাহিত করেন : “তুমি নিজের … Read more
Introducing THE ONLINE ART SHOP www.boipattor.in ‘বইপত্তর’-এর ওয়েবসাইটে এবার চলে এল ‘ছবিপত্তর’-ও। ছবিপত্তর মানে একেবারে অরিজিনাল হাতে-আঁকা ছবি, আর ছবির … Read more