ভলতের : “নিজের বাগান চাষ” থেকে নির্বাচিত কিছু অংশ

যারা নিজেদের ভগবান বানিয়ে তুলতে চায়, তারা চিরকালের মতো নিপাত যাক।

 

ধর্ম নিয়ন্ত্রক নয়, সে উৎসাহিত করে অপরাধকে। প্রতিটি ধর্মই প্রায়শ্চিত্তকরণের ওপর স্থাপিত।

 

আমাদের ধর্ম আবশ্যক, কিন্তু পুরোহিতে বিশ্বাস আবশ্যিক নয়। ঠিক যে-ভাবে স্বাস্থ্যবিধিসম্মত খাদ্য আবশ্যক, কিন্তু চিকিৎসকে বিশ্বাস আবশ্যিক নয়।

 

ঈশ্বর ও মানুষের মধ্যে ধর্ম হল বিবেক-সংক্রান্ত বিষয়, রাজা ও প্রজার মধ্যে তা প্রশাসনিক বিষয়, আর দুটি ব্যক্তির মধ্যে তা ধর্মান্ধতা বা প্রবঞ্চনার বিষয়।

 

নির্বোধেরা খ্যাতিমান লেখকের সব রচনারই প্রশংসা করে।

 

রাজনীতির খুঁটিনাটি আর কলকাঠি একদিন বিলীন হয় বিস্মৃতি-সাগরে। কিন্তু পাকা আইন, বুনিয়াদি প্রতিষ্ঠান এবং বিজ্ঞান ও শিল্পকলায় সাফল্য থেকে যায় চিরকাল।

 

সমাজে কুসংস্কারাচ্ছন্ন ব্যক্তির ভূমিকা ঠিক সেটাই যা সেনাবাহিনীতে কাপুরুষের, উভয়ই আপন আতঙ্কপীড়া দ্বারা বাকি সবাইকে সংক্রমিত করে।

 

যত কম অন্ধবিশ্বাস, তত কম বাদানুবাদ; যত কম বাদানুবাদ, তত কম দুর্ভাগ্য: এ কথা যদি সত্য না হয়, তবে আমরাই ভুল।

 

কুসংস্কারের সঙ্গে ধর্মান্ধতার সম্পর্ক ঠিক সেরকম, যেরকম জ্বরের সঙ্গে প্রলাপের, আর ক্রোধের সঙ্গে উন্মত্ততার।

 

ধর্মান্ধতা একবার যদি মগজে পৌঁছয়, তবে সে-ব্যাধি দুরারোগ্য।

 

দর্শনশাস্ত্রের প্রভাবে চিত্ত প্রশান্ত হয়, এবং ধর্মান্ধতা ও প্রশান্তির সম্পর্ক আদায়-কাঁচকলায়।

 

আত্মিক অতিমারীর মোকাবিলায় আইন ও ধর্ম যথেষ্ট নয়। বিশেষত ধর্ম, উপযুক্ত পুষ্টি জোগানোর পরিবর্তে, ব্যাধিগ্রস্ত মনকে আরও বিষিয়ে তোলে।

 

কাকাঁবো জিজ্ঞেস করে, “আশাবাদ কী?” কাঁদিদ-এর জবাব, “হায়! নিজের দুর্দশা সত্ত্বেও সব কিছু যে ঠিকঠাক চলছে জগৎসংসারে— এই ধারণার বাতিকই আশাবাদ।”

 

কতই-না মধুর হত সে-জীবন যদি তা কাটানো যেত ঈর্ষাহীন জনাকয়েক প্রতিভাবান জ্ঞানীর সঙ্গে।

 

সত্যের কোন দলীয় নাম নেই।

 

কখনওই ধরে নেবেন না যে অর্থ সব কিছু করতে পারে, নয়তো শেষমেশ আপনাকেই অর্থের জন্য সব কিছু করতে হবে।

 

টাকাপয়সার প্রশ্নে সকলেরই ধর্ম অভিন্ন।

 

ইচ্ছাকৃত মিথ্যাভাষণ ছাড়া রাজনীতি আর কী-ই বা?

 

সাধারণ ভাবে সরকার পরিচালনার কৌশল হল জনগণের এক অংশের থেকে অর্থ লুটে আর-এক অংশকে দেওয়া।

 

‘অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা’ কথাটি সম্পর্কে সাবধান, কারণ এটি শোষকেরা বলে আসছে চিরকাল।

 

কোলাব্যাঙের কাছে সৌন্দর্য কী? এমন এক ব্যাঙনি যার চোখ-দুটি ঠিকরে বেরোচ্ছে, মুখ ইয়া চওড়া, পেটটা হলদে, আর পিঠভরতি ফুটকি।

 

দর্পণ এক মূল্যহীন উদ্ভাবন। নিজেকে ঠিকঠাক দেখতে হলে অন্যের চোখে আপনার প্রতিফলন দেখুন।

 

সূত্র :

বইপত্তর-প্রকাশিত শান্তনু গঙ্গোপাধ্যায়ের তরজমায় “ভলতের : নিজের বাগান চাষ অনুচিন্তন ও কথিকা” থেকে নির্বাচিত কিছু অংশ।

বইটি কেনা যাবে এই লিঙ্ক থেকে : https://www.boipattor.in/product/nijer-bagan-chash/

Leave a Reply

Shop
Sidebar
0 Wishlist
0 Cart